বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‌‘আমরা এবার কোনোমতেই পরাজিত হবো না। আমাদের এবার বিজয় অর্জন করতেই হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।’

আজ শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৫তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম এই আলোচনা সভার‌ আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কোনো বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নেই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সরকার কোনো ছাড় দেবে না। ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

ছাড় আদায় করে নিতে হবে জনগণের শক্তিতে। আমরা যত বেশি মানুষ রাস্তায় নামাতে পারব, যত বেশি মানুষকে সামনে নিয়ে রাজপথ দখল করতে পারব তত বেশি তারা পরাজিত হবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ভোলায় নূরে আলমের আত্মত্যাগ, আব্দুর রহিমের আত্মত্যাগ, নারায়ণগঞ্জে শাওনের আত্মত্যাগ কখনোই বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। আমাদের প্রায় চার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সেই গায়েবি মামলা। নিজেরা ঘটনা ঘটাচ্ছে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।’

নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী শাওন হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এরা এত মিথ্যাচার করে। এসপি বললেন এটা কার ছেলে, কোন দলের ছেলে, সেটা এখনো নির্ধারিত হয়নি। কিন্তু তার চাচা আওয়ামী লীগ করে। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি যে, সে কোন দল করে এটা ইম্পরট্যান্ট নয়।

ইম্পরটেন্ট হচ্ছে সে একজন শ্রমিক, ইম্পরট্যান্ট হচ্ছে তাকে তোমরা গুলি করে হত্যা করেছো। ইম্পরট্যান্ট হচ্ছে গুলি করার কোনো পরিবেশ সেখানে সৃষ্টি হয়নি। প্রত্যেকটা বিষয়ের একটি আইন আছে। আন্তর্জাতিক পুলিশের আইনে রয়েছে এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে কোথায় গুলি করতে হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘আজকে পত্রপত্রিকায় এসেছে, আওয়ামী লীগ ভয় পেয়েছে, ভয় পেয়ে কি তারা পালটা আক্রমণ শুরু করেছে? পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই শাওন অবশ্যই যুবকদের কর্মী, নেতা। শাওন অবশ্যই বিএনপিকে সমর্থন করত এবং কাজ করত এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এটা নিয়ে এত কিছু করা হয়েছে শুধু ডাইভার্ট করার জন্য। আজকে পুলিশের হামলা, মামলা দিয়ে আমাদের ন্যায়সংগত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে তারা ডাইভার্ট করতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজেদের যদি মুক্ত করতে চাই, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে যদি মুক্ত করতে চাই, তাহলে অবশ্যই এই রাজপথের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় অর্জন করতে হবে।’

ফখরুল বলেন, আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা, আমাদের ভবিষ্যতের চিন্তা-ভাবনা, সবকিছুর ওপরে থাকবে আন্দোলন এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিজয়। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী জনতা বিরোধী গণতন্ত্র বিনাশি মানবতা বিনাশি শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে বাধ্য করতে হবে।

পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে এবং তাদের নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে এবং সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তারপরে নিরপেক্ষ সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, তারপরে নির্বাচন হবে।

সেই কমিশনের মাধ্যমে জনগণের পার্লামেন্ট জনগণের সরকার নির্বাচিত হবে। তার আগে এদেশের জনগণ কোনো কিছুই মেনে নেবে না।’

সংগঠনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা শাম্মী আখতার, শ্যামা ওবায়েদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মোরতাজুল করীম বাদরু, মোস্তাফিজুর রহমান, ফজলুর রহমান খোকন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ ছিলেন।